“এসআইআর বন্ধ করুন”—নির্বাচন কমিশনকে কড়া চিঠি মমতার, আতঙ্কে রাজ্য
রাজ্যে এসআইআর প্রক্রিয়া নিয়ে যখন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে প্রশাসনিক স্তরে উদ্বেগ বাড়ছে, ঠিক তখনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কাছে চিঠি পাঠালেন। চিঠিতে তাঁর দাবি, বর্তমান পরিস্থিতিতে এসআইআর প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়া বিপজ্জনক ও অমানবিক। অবিলম্বে প্রক্রিয়া বন্ধ বা স্থগিত করার আবেদন জানিয়েছেন তিনি।মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, কয়েক হাজার বিএলও দিনরাত রাস্তায় ঘুরে এনুমারেশন ফর্ম বিলি করছেন। পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ নেই, নেই প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো। এই অবস্থায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এত বড় কাজ শেষ করা সম্ভব নয়। এতে এমন সব ভুল-ত্রুটি তৈরি হবে, যার দায় শেষ পর্যন্ত সাধারণ মানুষকে বইতে হবে। অনেক প্রকৃত ভোটার ভুলবশত বাদ পড়ে যেতে পারেন। মমতার কথায়, এভাবে চাপিয়ে দেওয়া হলে লক্ষ লক্ষ মানুষের ভোটাধিকারই প্রশ্নের মুখে পড়বে।চিঠিতে তিনি আরও লিখেছেন, মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিদিন আত্মহত্যা, অসুস্থতা, হতাশার খবর আসছে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে। ইতিমধ্যেই এক বিএলও-র মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। আরও বহু বিএলও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের ওপর ভয়ঙ্কর চাপ সৃষ্টি হয়েছে। মমতার দাবি, এই পরিস্থিতি বোঝার বদলে কলকাতার সিইও দপ্তর উল্টো বিএলওদের ভয় দেখাচ্ছে, শোকজ করছে, কড়া ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দিচ্ছে। যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল ও অমানবিক করে তুলছে।তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, এত বড় দায়িত্ব কি মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ করা সম্ভব? ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে সমস্ত ডেটা আপলোড করার যে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে, তা বাস্তবে কতটা সম্ভব, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর আশঙ্কা, চরম চাপে ভুলভ্রান্তি অনিবার্য, আর ভুল ফর্ম জমা পড়লে প্রকৃত ভোটারই সবচেয়ে বড় ক্ষতির মুখে পড়বেন।চিঠিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্টভাবে লিখেছেন, এই প্রক্রিয়া যে উদ্বেগজনক জায়গায় পৌঁছেছে, তা অস্বীকার করা যাবে না। প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা সত্ত্বেও তিনি মানুষের ভয়, দুর্দশা ও অস্থিরতা সরাসরি অনুভব করছেন। সেই কারণেই এসআইআর স্থগিত বা বন্ধ করার দাবি জানান তিনি। একইসঙ্গে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের হস্তক্ষেপও চান।

